Wednesday, November 16, 2022

মাইগ্রেন ও মাথা ব্যাথায় প্রাথমিক চিকিৎসা

মাইগ্রেন ও মাথা ব্যাথায় প্রাথমিক চিকিৎসা




মাথা ব্যাথার প্রাথমিক চিকিৎসা

1.লাল লবঙ্গ চা পান করুন :-

লবঙ্গের ঔষধি গুন এতটাই বেশী যে লবঙ্গ দেয়া লাল চা সহজেই কমিয়ে ফেলে মাথা ব্যাথা। কাজের চাপে এক কাপ লাল চা আপনাকে আবারো চাঙ্গা করে তুলতে পারে|

2. বরফ থেরাপি :-

এটি মাথা ব্যাথা কমানোর আক্ষরিক একটি পদ্ধতি। বরফের প্যাকেট মাথার উপর ধরলেও মাথা ব্যাথা কমে যায়।

3. পেয়াজ এর রস:-

পেয়াজ রস করে কপালে লাগান, মাথা ব্যথা থেকে উপশম হবে।

আধকপালি বা মাইগ্রেন হলে করণীয় মাথাব্যথার প্রকৃত কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজও কোনও স্থির সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। টেনশনসহ নানা কারণেই মাথাব্যথা হতে পারে। এসব মাথাব্যথাকে আমরা আধকপালি বা মাইগ্রেন বলি। এ নিস্তারের উপায় কি? সে বিষয়েই আজকের আলোচনা।



কি কারণে মাথাব্যথা হতে পারে:

টেনশন বা অন্য কারণেও এ ব্যথা হতে পারে। রক্তবাহী শিরাগুলো কখনও কোনও কারণে অতিরিক্ত রক্ত সরবরাহ করলেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ ব্যথা মাইগ্রেনের ব্যথার চেয়ে তীব্র এবং মাইগ্রেনের ব্যথা বলে বুঝতে ভুল হতে পারে।

বংশগত প্রভাব:

অন্যান্য ব্যথার তুলনায় মাইগ্রেনের ব্যথার ওপর বংশগত প্রভাব বেশি- যা মূলত কোষের একক ‘জিন’-এর বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে। এর প্রমাণ- নেদারল্যান্ডের লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্টির একদল নিউরোলজিস্ট একজন মাইগ্রেন রোগীর দেহ থেকে মাইগ্রেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জিন পৃথক করেন। পরে ওই রোগীর মাইগ্রেনের ব্যথা আর দেখা যায়নি।

দুশ্চিন্তা-অস্থিরতা:

যারা সবসময়ে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণে চিন্তাগ্রস্ত থাকেন বা দুশ্চিন্তা ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে এর প্রকোপ বেশি। তাছাড়া হঠাৎ করে কোনও বিপজ্জনক খবর বা আবেগপ্রবণ অবস্থা এ মাইগ্রেনের জন্ম দেয়।

প্রভাবিত করে এমন কারণ:


প্রথমত:

কিছু কিছু খাবার মাইগ্রেনের ব্যথার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় বা হালকা ব্যথার ভাব থাকলে তা পরিপূর্ণ মাইগ্রেনের ব্যথায় রূপ লাভ করে। নিম্নলিখিত খাবার উল্লেখযোগ্য-

১. চকোলেট

২. পনির

৩. মদ

৪. কোলাজাতীয় পানীয়

দ্বিতীয়ত:

মাইগ্রেন রোগী যারা এ ব্যথার পাশাপাশি সাইনাসগুলোর প্রদাহে ভুগছেন বা প্রচন্ড সর্দি-কাশি বা ঠান্ডায় ভুগছেন; তাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয়ত:

যখন প্রচন্ড গরম পড়ে এবং পরিবেশের অবস্থা ভ্যাপসা আকার ধারণ করে তখন মাইগ্রেনের রোগীর মাথাব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে শীতকালে যদি ঠান্ডা বাতাস বেশি লাগে বা কুয়াশা পরিবেষ্টিত অবস্থা বিরাজ করে তখন এর প্রকোপ আরও বেড়ে যায়।


সাধারণ চিকিৎসা:


১. যেসব খাবার মাইগ্রেনের ব্যথাকে বাড়িয়ে দেয় সেসব খাবার বর্জন করা।

২. যদি কোনও মহিলা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেতে থাকেন, তবে তিনি বড়ি খাওয়া বন্ধ রাখবেন এবং অন্য যে কোনও ধরনের বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।

৩. পরিবেশগত কারণে যদি ধোঁয়া, ধুলাবালি, প্রচন্ড গরম বা শীতের বাতাসের মাঝে বের হতে হয় তবে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে।


মাইগ্রেন কিঃ-

মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথা ব্যথা। মাইগ্রেন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ হেমিক্রেনিয়া থেকে। হেমি অর্থ অর্ধেক আর ক্রেনিয়া অর্থ মাথার খুলি বা করোটি। এই ব্যাথা অর্ধ মাথায় হয় বলে এর নামকরণ করা হয় হেমিক্রেনিয়া। কিন্তু ব্যাথা একসাথে দুপাশেও হতে পারে অথবা এক পাশ থেকে আরেক পাশে দৌরাদৌরি করতে পারে।


কারণসমূহ:-

* বংশগত বা জেনেটিক।

* দুশ্চিন্তা এবং অস্থিরতা।

* শব্দ দূষণ, পরিবেশ দুষণ, বায়ু দুষণ ইত্যাদি।

* ধূমপান ও মদ্যপান।

* প্রচণ্ড রোদ অথবা গরম।

* তীব্র গন্ধ যেমন আতর, পারফিউম ইত্যাদি।

* চকলেট বা এ জাতীয় খাবারের কারণে।

* ঘুম কম হওয়া অথবা অতিরিক্ত সময় ধরে বিছানায় শুয়ে থাকা।

* অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া এবং কম পানি পান করার কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে।


মাইগ্রেনের লক্ষণঃ-

* সহনীয় থেকে তীব্র মাথাব্যাথা, সাধারণত মাথার একপাশে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয় ।এক পাশ থেকে অন্য পাশে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয় ।

* মাথার শিরা ব্যাথায় টনটন করে ।

* শারীরিক পরিশ্রমের সময় ব্যাথা বৃদ্ধি পায় ।

* মাথা ব্যাথার সময় স্বাভাবিক কাজ কর্ম করা যায় না ।

* বমি বমি ভাব ও বমি হয় মাঝে মাঝে ।

* কথা ভালোভাবে বলতে না পারা ।

* কোন কাজে মনোযোগ দিতে না পারা ।

* চোখে ঝাপসা দেখা।

* মাথা ঘোরানো।


করণীয়ঃ-


* যাদের এ রোগ আছে, তাদের অন্তত দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক।

* কফি, চকোলেট,পনির, কোমল পানীয়, মদ এড়িয়ে চলতে হবে।

* দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা যাবে না।

* জন্মবিরতিকরণ পিল না ব্যবহার করে অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে।

* রিশ্রম, মানসিক চাপ, দীর্ঘ ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে হবে।

* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।

* কড়া রোদ বা তীব্র ঠাণ্ডা পরিহার করতে হবে।

* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।

* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।

* নিয়মিত সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন ।

* দুশ্চিন্তা বাদ দিন ।


0 comments:

Post a Comment