হ্যালো বন্ধুরা । আমাদের জীবন আনন্দ, সুখ দুঃখ হাসি ও কান্নার এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ এর মধ্যেই রয়েছে রোগ ব্যাধি ও জড়ার উপস্থিতি।
বর্তমানে বিজ্ঞানের কল্যানে বেশিরভাগ রোগই নিরাময় করা সম্পূর্ণ ভাবে সম্ভব, কিন্তু বেশকিছু রোগের চিকিৎসা আজও অজানা !
আমাদের এই লেখার মাধ্যমে আমরা আপনাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ ও তাদের নিরাময় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।
প্রাথমিক চিকিৎসা কাকে বলে?
প্রাথমিক চিকিৎসা হচ্ছে ডাক্তারী চিকিৎসার পূর্বে রােগী বা আহত ব্যক্তির অবস্থা যাতে খারাপের দিকে না যায় বা অবনতি না ঘটে তার জন্য ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনিকভাবে যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় তাকেই প্রাথমিক চিকিৎসা বলে।
প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য:
১। আহতদের জীবন রক্ষার চেষ্ঠা করা।
২। রােগী বা আহত ব্যক্তির অবস্থার অবনতি রােধ করা।
৩। আহতদের চিকিৎসায় সহযােগীতা করা।
প্রাথমিক চিকিৎসার গুরুত্ব
প্রাথমিক চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন সময়ের এক ফোড়, অসময়ের দশ ফোঁড়”। প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে কিছু জ্ঞান থাকা প্রয়ােজন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ঘটনা, অগ্নি, ভূমিকম্প প্রভৃতি দুর্ঘটনায় লােক বিভিন্নভাবে আহত হয়। ইহাছাড়া আধুনিক জগতে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির বহুল ব্যবহারের দরুন মানুষ বিভিন্নভাবে আহত হয়। তাই এই সমস্ত আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি নাগরিকের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ গ্রহন অপরিহায্য হয়ে পড়েছে।
স্নায়ুবিক আঘাত (Shock)/ফিট
আঘাত, তীব্র ব্যথা, দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকলে পায়ে রক্ত জমে রক্ত সঞ্চালনের যে অসুবিধার সৃষ্টি হয় তাকেই স্নায়ুবিক আঘাত বা ফিট বলে।
করনীয়:
(ক) প্রথমেই রােগীকে সমান জায়াগায় (মেঝেতে) পা উচু করে শােয়াতে হবে। এভাবে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রােগীর জ্ঞান ফিরে আসে। তবে রােগীর যদি খিচুনি হয় তাহলে কাপড়ের টুকরা/রুমাল মুখের মধ্যে দিতে হবে যেন জিহ্বায় কামড় না লাগে। এর পর ডাক্তারের নিকট নিয়ে আসতে হবে।
(খ) ঘাড়, বুক ও কোমরের কাপড় ঢিলা করে দিন।
(গ) উৎসাহ জনক কথা বলে আহতের মনে সাহসের সঞ্চার করুন।
দাহ ও ঝলসানাে ক্ষত (Burns and Scalds):
শুস্ক তাপে, বিদ্যুৎ প্রবাহ, ঘর্ষনে রাসায়নিক পদার্থে বা বিকিরণে পুড়ে যাওয়াকে দাহ বলে। আদ্র তাপে যেমন-ফুটন্ত পানি। বা অন্য কোন গরম পদার্থের সংস্পর্শে এসে পুড়ে যাওয়াকে ঝলসানাে বলে।
করনীয়ঃ
(ক) দাহ বা ঝলসানাে রােগীর ক্ষত অংশে এমনভাবে ধুয়ে ফেলুন যাতে পতিত ঠান্ডা পানি ধীরে ধীরে ক্ষতের উপর দিয়ে গড়িয়ে যায়, এভাবে যতক্ষণ ক্ষস্থানের জ্বালা-যন্ত্রণা না কমে এবং ক্ষতস্থানে গরমভাব না কমে ততক্ষণ ঠান্ডা পানি দিতে হবে অথবা ক্ষত অংশকে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
(খ) পরিস্কার জীবানুমুক্ত ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান হালকা করে বেঁধে দিতে হবে।
(গ) আহত ব্যক্তির যদি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তবে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে প্রেরনের ব্যবস্থা সহ শ্বাস-প্রস্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্জনীয়ঃ
(ক) যে কোন লােশন, মালিশ বা তৈল ড্রেসিং ব্যবহার এ বিরত থাকুন।
(খ) পােড়া অংশে হাত লাগানাে যাবে না।
রক্তক্ষরণ (Hemorrhage) করনীয়
(ক) পরিস্কার কাপড় অথবা ব্যান্ডেজ দিয়ে চাপ দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরুন।
(খ) যে অঙ্গ হতে রক্ত নির্গত হচ্ছে তা উচু করে রাখুন।
(গ) আঠালাে ব্যান্ডেজের সাহায্যে রক্তপাত বন্ধ করুন।
(ঘ) প্রয়ােজন বােধে টুনিকেট ব্যবহার করে রক্তপাত বন্ধ করুন।
(ঙ) কখনও ক্ষতস্থান খােলা রাখা যাবে না।
ধোঁয়ায় শ্বাস রােধের চিকিৎসা
ধোয়ায় আটকে গেলে প্রথমে আত্মরক্ষার প্রয়ােজন, তারপর দুর্ঘটনাস্থল থেকে রােগীকে স্থানান্তর করতে হবে। ভেজা তােয়ালে, রুমাল বা কাপড়ের টুকরা দিয়ে নিজের মুখ ও নাক বেঁধে অথবা ফেসমাস্ক লাগিয়ে উদ্ধারের জন্য অগ্রসর হবে তারপর আহত রােগীকে আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
চোখের মধ্যে কোন কিছু ঢুকলে প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
(ক) যদি পানির ঝাপটা (কয়েক বার) দিয়ে বাইরের বস্তুটি না সরে যায় তাহলে ডাক্তারের নিকট নিয়ে আসবেন।
(খ) কোনক্রমে রােগেীকে চোখ ডলতে দেওয়া যাবে না।
(গ) যদি বাহিরের কোন কিছু প্রবেশ করে চোখের গােলকে একধারে আটকে থাকে তবে তা পাতলা ভেজা কাপড় বা রুমাল দিয়ে বের করতে হবে।
কানে কিছু প্রবেশ করলে
অনেক সময় কানের ছিদ্র পথে ছােট কীট পতঙ্গ অথবা ময়লা প্রবেশ করে তবে কানের ছিদ্র পথে । অলিভয়েল বা নারিকেল তেল দিতে হবে। তবে তেল দেয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হবে রােগীর কানের পর্দায় কোন ছিদ্র আছে কিনা।
প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু পদ্ধতি
(ক) ক্ষিপ্র গতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে আগের কাজ আগে এবং পরের কাজ পরে এ নীতিতে কাজ করতে হবে।
(খ) শ্বাস-প্রশাসের বিঘ্ন দেখা দিলে কৃত্রিম উপায়ে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
(গ) রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত রক্ত ক্ষরণ বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
(ঘ) স্নায়ুবিক আঘাতের চিকিৎসা সঙ্গে সঙ্গে করতে হবে।
(ঙ) রােগী বা আহত ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের নিকট নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
(চ) নিয়মিত পড়াশুনা ও মহড়া দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তাহলে আজকের জন্য এইটুকুই , এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মধ্যে share করতে ভুলবেন না।
আমাদের পরবর্তী লেখাগুলোর নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য ঘন্টার মতো দেখতে বাটনটিতে ক্লিক করুন।
আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন। আমাদের টিম তার উত্তর যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার চেষ্টা করবে।
সবশেষে ভালো থাকবেন, খুশি থাকবেন আর সুস্থ থাকবেন।
0 comments:
Post a Comment