***** HEALTH IS WEALTH *****

“I believe that the greatest gift you can give your family and the world is a healthy you.” – Joyce Meyer

**CONNECT US TO GET HEALTH TIPS DAILY ***

“Good health is not something we can buy. However, it can be an extremely valuable savings account.” – Anne Wilson Schaef

**YOUR FITNESS IS YOUR GREATEST WEALTH**

“A fit body, a calm mind, a house full of love. These things cannot be bought – they must be earned.” – Naval Ravikant

** FOLLOW US TO GET DAILY HEALTH BLOGS ***

“If you're happy, if you're feeling good, then nothing else matters.” – Robin Wright

**** THANK YOU ****

THANK YOU FOR YOUR CONTINUOUS HEALTH AND SUPPORT

Friday, September 30, 2022

স্বাস্থ্য ভাল করার কিছু টিপস

 

আপনি কি আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত। আসলে চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনি চাইলে নিজে নিজেই ঘরে বসে স্বাস্থ্য ভাল করতে পারেন। ভাবছেন এটা কি উপায়ে? এর উপায় হল আপনি নিয়মিত ব্যায়াম ও ভিটামিন যুক্ত খাদ্য-দ্রব্য গ্রহণ করার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য ভাল করার জন্য নিজেকে সব-সময় সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন। এখন আপনি স্বাস্থ্য ভাল করার নিয়ম অনুসরণ করে কাজ শুরু করুন। আপনার সক্রিয় চেষ্টার ফলাফলই হয়ত আপনি নিজেই কিছু দিন পরে খুব ভালভাবে অনুভব করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি নিজে ওজন পরিমাপ করে দেখতে পারেন।

স্বাস্থ্য ভাল করার  কিছু টিপস

১)  নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াঃ 
সুস্থ ও সুন্দর স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন পুষ্টি উপাদান। কিছু বিশেষ খাবার আছে যে খাবারগুলো স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। তাই এই ক্ষেত্রে পালং শাক, ব্রকলি, রঙিন ফল, ডিম, বাদাম ও বিভিন্ন বীজ, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি, চিনি ছাড়া চা, তৈলাক্ত মাছ ও ডার্ক চকলেট এইসব নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখুন।

২) খাবার সময়মত খানঃ 
আপনি পুষ্টিকর খাবার খান নিয়মিত, সময়মত ঘুমান যতটুকু সম্ভব চিন্তামুক্ত থাকুন  এবং পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন  শরীর এর গঠন ঠিক রাখতে  সকাল বিকেল   মুখের রুচি বৃদ্ধির জন্য, ‘সিরাপ ‘পিউটন বা সিনকারা খেতে পারেন, এর পাশাপাশি প্রচুর ভিটামিন যুক্তখাবার খাবেন তাহলে আপনি  ভাল সাস্থ্যর অধিকারী হতে পারবেন ঠিক মত খাওয়া দাওয়া ছাড়া কখনোই তা সম্ভব নয়।

৩)  নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ 
আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। প্রতিদিন নিয়মিত অন্তত ৩০ মিনিট এক টানা হাঁটার চেষ্টা করতে পারেন। এছাড়া আরও করতে পারেন দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার ও অন্য যে কোনো ব্যায়াম যেগুলো ক্যালোরি ক্ষয় করে সেগুলো আমাদের সবই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কেননা নিয়মিত ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং লিবিডো বৃদ্ধি পায় যা স্বাস্থ্যের জন্য জরুরী।

৪) পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুনঃ  
আমাদের সুস্থ্য স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা। কেননা পরিছন্ন থাকা আমাদের একান্ত জরুরী। পরিছন্ন থাকার কারনে আমাদের স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং এতে করে শরীর ও মন খুব ভাল থাকে।

৫)  প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াঃ 
 আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন প্রচুর পানি পান করা। আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি উপস্থিত না থাকলে নানান রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো আমাদের শরীরে লিবিডো কমে যাওয়া। তাই আমাদের সুস্থ্য স্বাস্থ্যের জন্য দিনে অন্তত ৮-৯ গ্লাসপানি পান করা উচিত।

৬)  ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুনঃ
 আমাদের শরীরে ধূমপান ও মদ্যপান লিবিডো কমিয়ে দেয়। ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ধূমপানের কারনে নিকোটিন রক্ত জমাট বাধিয়ে ফেলে এবং রক্তচলাচল কমিয়ে দেয়। তাই আজ থেকে ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করার চেষ্টা করুন।

৭) ফল ও সবজি বেশি বেশি খানঃ  
পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি খাদ্য তালিকায় রাখুন। তবে একটা কথা একবারে বেশি করে খাওয়ার চেয়ে অল্প অল্প করে বার বার খাওয়া শরীরের জন্য বেশ ভাল।

৮) নিয়মিত ঘুমানঃ  
আমাদের রাতে তাড়াতাড়ি খাওয়া উচিত। খাওয়ার এক থেকে দুই ঘন্টা পর শোওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভাল। আমাদের সুস্বাস্থ্য ও ফিগারের জন্য নিয়মিত ও পরিমিত ঘুম প্রয়োজন। আমাদেরকে দিনে শোওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৯) নিয়মিত হাঁটুনঃ
 আপনি প্রতিদিন সমতল জায়গায় হাঁটার চেষ্টা করতে পারেন। একটা কথা মনে রাখবেন, হাঁটা সর্বোৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত অন্তত এক থেকে দুই ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনার শরীর ও মন ২টাই খুব ভাল থাকবে।


হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয় || স্ট্রোক

 

 হ্যালো বন্ধুরা । আমাদের জীবন আনন্দ, সুখ দুঃখ হাসি ও কান্নার এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ এর মধ্যেই রয়েছে রোগ ব্যাধি ও জড়ার উপস্থিতি।
বর্তমানে বিজ্ঞানের কল্যানে বেশিরভাগ রোগই নিরাময় করা সম্পূর্ণ ভাবে সম্ভব, কিন্তু বেশকিছু রোগের চিকিৎসা আজও অজানা !
আমাদের এই লেখার মাধ্যমে আমরা আপনাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ ও তাদের  নিরাময় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।



গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে মারাত্মক একটা শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় অনেককেই, যার নাম হিটস্ট্রোক। অধিক তাপপ্রবাহে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয় যাকে বলে ডি-হাইড্রেশন। এই পানি শূন্যতা মাত্রাতিরিক্ত হলে মস্তিষ্কে চাপ পড়ে এবং হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে মানুষ। খোলা মাঠে যারা কাজ করেন-যেমন কৃষক, রিক্সা চালক, বাস চালকগণ, গার্মেন্টস এর শ্রমিক, বাচ্চারা যারা নিয়মিত রোদে স্কুলে যায় এবং দৌড়বিদদের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তাই এই গরমে ঘরের বাইরে পা রাখার আগে হিট স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। আসুন জেনে নেওয়া যাক হিট স্ট্রোকের লক্ষণ আর সতর্ক হয়ে যান আগেভাগেই।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণঃ
১) ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া হিট স্ট্রোকের একটি অন্যতম লক্ষণ।

২) হিট স্ট্রোকের আগে ত্বক শুষ্ক আর লালচে হয়ে ওঠে।

৩) হিট স্ট্রোকের আগে রক্তচাপ অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়।

৪) এ সময় শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়।

৫) হিট স্ট্রোকের সময় নাড়ির স্পন্দন অত্যন্ত ক্ষীণ ও দ্রুত হয়ে যায়।

৬) হিট স্ট্রোকের আগে মাথা ঝিমঝিম করা, শরীরে খিঁচুনি হতে পারে।

৭) হিট স্ট্রোকের আগে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।

৮) শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যায়। হিট স্ট্রোকের সময় শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) বা তার চেয়ে বেশি হতে পারে।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ কী করণীয়ঃ

১) হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পড়ুন। হালকা রঙের পোশাক পড়ুন যাতে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। খুব আঁটোসাটো পোশাক না পরাই ভাল।

২) হিট স্ট্রোক হলে আক্রান্তকে যত দ্রুত সম্ভব ঠাণ্ডা পরিবেশে সরিয়ে আনতে হবে। সম্ভব হলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্তকে তাপানুকূল (এয়ারকন্ডিশন্ড) ঘরে রাখতে হবে। মুখে খেতে পারলে প্রচুর পানি, জুস পান করাতে হবে।

৩) যেকোনো উপায়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমানোর চেষ্টা করতে হবে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর জলে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে ভেজা কাপড় দিয়ে কিছুক্ষণ জড়িয়ে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ঘরের পাখা চালিয়ে রাখতে হবে।

৪) যাদের দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হয় বা রোদে ঘোরাঘুরি করতে হয়, তাদের একটানা বেশিক্ষণ পরিশ্রমের কাজ না করাই ভালো। ছোট ছোট বিরতি নিয়ে কাজ করা উচিত।

৫) যারা রোদে কাজ করেন তাদের জন্য পরামর্শ হলো- প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে যাতে শরীরের আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় থাকে। মাথায় টুপি, ছাতা এবং সানগ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে। স্কুলের ছাত্ররা প্রখর তাপে যাতে বাইরে খেলাধুলা না করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

৬) প্রথমিক পর্যায়ে হিট স্ট্রোকের মোকাবিলা করার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। মনে রাখা উচিত এই হিটস্ট্রোক একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের অতি অল্প সময়ে মৃত্যু ঘটায়।

 

তাহলে আজকের জন্য এইটুকুই , এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মধ্যে share করতে ভুলবেন না।
 আমাদের পরবর্তী লেখাগুলোর নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য ঘন্টার মতো দেখতে বাটনটিতে ক্লিক করুন। 

আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন। আমাদের টিম তার উত্তর যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার চেষ্টা করবে।

সবশেষে ভালো থাকবেন, খুশি থাকবেন আর সুস্থ থাকবেন।

ব্রেইন স্ট্রোক ও তার প্রতিকার

 


 হ্যালো বন্ধুরা । আমাদের জীবন আনন্দ, সুখ দুঃখ হাসি ও কান্নার এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ এর মধ্যেই রয়েছে রোগ ব্যাধি ও জড়ার উপস্থিতি।
বর্তমানে বিজ্ঞানের কল্যানে বেশিরভাগ রোগই নিরাময় করা সম্পূর্ণ ভাবে সম্ভব, কিন্তু বেশকিছু রোগের চিকিৎসা আজও অজানা !
আমাদের এই লেখার মাধ্যমে আমরা আপনাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ ও তাদের  নিরাময় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।


প্রাণঘাতী ব্যাধিগুলোর মধ্যে ব্রেইন স্ট্রোক অনেক বেশি বিপজ্জনক। কিন্তু মানুষ এমনিতেই ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় না। অসেচতনতা এবং অনিয়তান্ত্রিক জীবনধারার কারণেই ব্রেইন স্ট্রোক-হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী ব্যাধিগুলো আঘাত করে মানুষকে।


 প্রাণঘাতী ব্যাধিগুলোর মধ্যে ব্রেইন স্ট্রোক অনেক বেশি বিপজ্জনক। কিন্তু মানুষ এমনিতেই ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় না। অসেচতনতা এবং অনিয়তান্ত্রিক জীবনধারার কারণেই ব্রেইন স্ট্রোক-হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী ব্যাধিগুলো আঘাত করে মানুষকে। 

তবে জীবনধারায় সচেতনতামূলক পরিবর্তন এনে অনেকাংশেই ব্রেইন স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে এ পর্যায়ে থাকছে ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়।

ব্রেইন স্ট্রোক 
মস্তিষ্কের রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটার কারণে মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। একারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে। এছাড়া, মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে, ধমনীতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েও ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে।

ব্রেইন স্ট্রোকের উপসর্গ সমূহ
স্ট্রোক করার কয়েক মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা যেতে থাকে এবং উপসর্গগুলো দেখা দিতে থাকে। যেমন: 

•    স্মরণ শক্তি কমে যেতে পারে।
•    শরীরের যেকোনো একপাশ অবশ হয়ে যেতে পারে। 

ব্রেইন স্ট্রোকের পর বিশেষ করে মুখ, হাত, পা ও কথা বলার ওপর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

মুখের ওপর প্রভাব
•    রোগী কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।
•    মুখ যেকোনো দিকে বাঁকা হয়ে যেতে পারে।

হাতের ওপর প্রভাব
•    দুই হাত বা একহাত অবশ হয়ে যেতে পারে।
•    এক বা দুই বাহু ওপরে তুলতে পারবে না ।

কথা বলার ওপর প্রভাব
•    ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী স্পস্টভাবে কথা বলতে পারবে না।
•    এমনকি কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলতে পারে।

অন্যান্য উপসর্গ
•    ঘুম ঘুম ভাব হবে, ঝিমুনি আসবে।
•    চোখে ঝাপসা দেখা যাবে।
•    প্রচুর মাথা ব্যথা শুরু হবে। 

করণীয়
ব্রেইন স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ব্রেইন স্ট্রোকের প্রকারভেদ

ইচকেমিক (Ischaemic) স্ট্রোক
মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহের ব্যাঘাত ঘটার কারণে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে। সাধারণত রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে, উচ্চ রক্তচাপের কারণে বা কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ইচকেমিক স্ট্রোক হয়ে থাকে। প্রায় ৮০ ভাগ ব্রেইন স্ট্রোকই হচ্ছে ইচকেমিক (Ischaemic) স্ট্রোক।

ইচকেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসা
এ ধরনের স্ট্রোক চিকিৎসা করতে হলে অবশ্যই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হবে বা জমাট বাঁধা রক্ত ভেঙে তরল করতে হবে। 

প্রাথমিকভাবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এরপর ব্রেইন স্ক্যান (CT) এবং ম্যাগনেটিক রেজনেন্স ইমাজিংয়ের (MRI) মাধ্যমে পরীক্ষা করে স্ট্রোকের মাত্রা সম্পর্কে সঠিকভাবে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

জমাট বাঁধা রক্ত (Thrombolysis) তরল করতে যেসব ওষুধ সেবন করা হয় সেসবের মধ্যে অ্যাল্টিপ্লেস (alteplase) ও আস্পিরিন (Aspirine) উল্লেখযোগ্য।

আর মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপ কমাতে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যেসব ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে, সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: থাইয়াজাইড ডিউরেটিক্স (Thiazide diuretics)। এই ওষুধ  প্রস্রাবের মাত্রা বাড়িয়ে শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং রক্তের পরিমাণ কমে গিয়ে রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য ব্যবহৃত ওষুধ 
রক্তে যদি কোলেস্টরেল বা LDL এর মাত্রা বেশি থাকে তবে স্টাটিন গ্রুপের ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। যেমন: Atorvastatine, lovastatine প্রভৃতি।

হ্যামরেজিক (Haemorrhagic) ব্রেইন স্ট্রোক
মস্তিষ্কের দুর্বল রক্তনালীর ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহের সময় রক্তনালী ফেটে গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক হওয়াকে হ্যামরেজিক স্ট্রোক বলে। 

যেসব কারণে ব্রেইন স্ট্রোক হয়ে থাকে
সাধারণত ৬৫ বছরের ওপরে বয়স হলে ব্রেইন স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া, মধ্য বয়সেও ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে। এমনকি বাচ্চাদেরও ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে। এই ব্রেইন স্ট্রোকের পিছনে কারণ সমূহ হলো;
•    শরীরে অতিরিক্ত ওজন।
•    শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের অভাব।
•    পুষ্টিহীন খাবার গ্রহণ না করা।
•    কোনোভাবে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হলে যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে কিংবা হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের সমস্যা হলে।
•    ডায়াবেটিসের মাত্রা অনেকদিন ধরে বেশি থাকলে।
•    জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ বা কোন হরমোনাল ওষুধ সেবনের কারণে। 
•    নিয়মিত মাদক (হিরোইন, কোকেইন জাতীয়) সেবন করলে।
•    রক্তে অ্যামাইনো এসিড অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে।
•    নিয়মিত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন করলে।
•    মানসিক হতাশা বেড়ে গেলে।

ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায় 
ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধে যেসব কাজ করতে হবে তা হলো;
•    স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
•    নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
•    মাদক সেবন বন্ধ করতে হবে।
•    রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

নিয়মতান্ত্রিক ধারায় স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করে মরণব্যাধি স্ট্রোকের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।


তাহলে আজকের জন্য এইটুকুই , এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের মধ্যে share করতে ভুলবেন না।
 আমাদের পরবর্তী লেখাগুলোর নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য ঘন্টার মতো দেখতে বাটনটিতে ক্লিক করুন। 

আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন। আমাদের টিম তার উত্তর যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার চেষ্টা করবে।

সবশেষে ভালো থাকবেন, খুশি থাকবেন আর সুস্থ থাকবেন।

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

 


ডিপ্রেশন কী?

ডিপ্রেশন খুবই কমন কিন্তু মারাত্মক একধরণের মানসিক ব্যাধি যা আপনার অনুভূতি, চিন্তা-চেতনা ও কাজকর্মের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমরা অনেক সময় দুঃখবোধ(Sadness)ও বিষণ্ণতাকে(Depression)এক বলে মনে করি। এ দুটো কিন্তু এক নয়। দুঃখবোধ হলো সাময়িক মন খারাপ যা অল্প কিছু সময় পরেই ঠিক হয়ে যায়। এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে, ডিপ্রেশন দীর্ঘকালীন সমস্যা। যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসার ও পরামর্শের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

ডিপ্রেশন কাদের হয়?

যেকোনো দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ লোক বিষণ্ণতা রোগে ভুগে থাকে। মেয়েদের এ রোগে ভোগার প্রবণতা পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ। বেকার ও নিঃস্ব জীবন যাপনকারীরাও (বৃদ্ধ, স্বামী পরিত্যক্ত স্ত্রী) এ রোগে বেশি ভুগে থাকেন। যারা বিভিন্ন ধরনের নেশা করে তাদের মধ্যেও ডিপ্রেশনের হার বেশি। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে সাধারণত এ রোগ বেশি হয়। আগে একটি ধারণা ছিল, সাধারণত বয়স্কদের এ রোগ হয়। কিন্তু এ ধারণা বোধ হয় এখন আর টিকছে না। আধুনিক নাগরিক জীবনের চাপ সব হিসাব ওলট-পালট করে দিচ্ছে।

কেন হয় ডিপ্রেশন?

ডিপ্রেশন একটি জটিল রোগ। কেন এ রোগ হয় নির্দিষ্ট করে কারো পক্ষেই তা বলা সম্ভব না। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই কিছু কমন কারণ থাকে যার জন্য এ রোগের উৎপত্তি হতে পারে।

১. অপমানবোধঃ মানসিক বা শারীরিকভাবে অবমাননার স্বীকার হলে অনেকে ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়।

২. নিরাপত্তাহীনতা বা একাকীত্বঃসামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেকে বিষণ্নতার স্বীকার হয়। তাছাড়া, বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব বা অন্যান্য কাছের মানুষদের সাথে সম্পর্কহীনতা বা মতবিরোধ থেকেও অনেকে বিষণ্ণতায় ভুগে থাকে।

৩. মৃত্যুশোকঃ কাছের মানুষের মৃত্যু অনেকের ক্ষেত্রে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়।

৪. বংশগত প্রভাবঃ পরিবারে কারো ডিপ্রেশন থাকলে তা অন্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

৫. জীবন পদ্ধতিতে বড় ধরণের পরিবর্তনঃ জীবনে বড় কোন পরিবর্তন ঘটলে তা থেকে অনেকে বিষণ্ণতায় ভুগে। চাকরি হারালে, অবসরে গেলে, আয় কমে গেলে, জায়গা পরিবর্তন করলে, বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে, এমনকি, নতুন বিয়ে করলেও অনেকে ডিপ্রেশনের শিকার হয়।

৬. বড় কোন রোগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ বড় ধরণের কোন রোগ থাকলে রোগী ডিপ্রেশনের শিকার হতে পারে।

৭. ঔষধের প্রভাবঃ নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবনের ফলেও কেউ কেউ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়। যেমন, ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত আইসোট্রেটিনিয়ন বা অ্যান্টিভাইরাল “ইন্টারফেরন-আলফা” জাতীয় ঔষধ সেবনেও অনেকে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়।

এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে মানুষ বিষণ্ণতায় ভুগে থাকে। ব্যক্তিভেদে বিষণ্ণতার কারণে পার্থক্য দেখা যায়।


ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির জন্য কি কি সহায়ক হতে পারে?

১. রুটিনমাফিক চলাঃ ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের জীবনকে একটা রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। প্রতিদিনের কাজ-কর্মকে যদি একটা নিয়মের মধ্যে বেঁধে ফেলা যায় তবে তা ডিপ্রেশন কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

২. লক্ষ্য নিয়ে কাজ করাঃ লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। ডিপ্রেশনে যেহেতু কোন কাজ করতে ইচ্ছা করে না তাই প্রতিদিন একটু একটু করে কাজ করার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

ধরা যাক, প্রথম দিন আপনি ঠিক করলেন আপনি আজ একটা মজার কিছু রান্না করবেন। যদি আপনি সেই কাজটা ঠিক মত করতে পারেন তবে পরের দিন আর একটু বেশি কিছু করার কথা চিন্তা করতে হবে। এভাবে ধীরে ধীরে কাজের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারলে এক সময় ডিপ্রেশন কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

৩. নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ প্রতিদিন অল্প কিছু সময় ব্যায়াম করলে তা আপনার শরীর এবং মনকে সুস্থ রাখবে। ব্যায়াম করা মানে, ম্যারাথন দৌড় টাইপ কিছু না, আপনি যদি প্রতিদিন কিছু সময় হাঁটাহাটি করেন তবুও তা আপনার মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যা আপনাকে ডিপ্রেশন কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।

৪. সুষম খাদ্য গ্রহণঃ সুষম খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি মেলে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন খাবারে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ থাকে। সাইক্রায়াটিস্টদের মতে, যেসব খাবারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এ্যাসিড এবং ফলিক এসিড থাকে সেসব খাবার ডিপ্রেশন কমাতে সহায়তা করে।

৫. অনিদ্রা দূর করাঃ পর্যাপ্ত ঘুম ডিপ্রেশন কমায়। ডিপ্রেশনের রোগীদের নিদ্রাহীনতা দেখা দেয়্। তাই, প্রথমেই ঘুম সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রতিদিনের জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে নিদ্রাহীনতা দূর করা সম্ভব। প্রতিদিন ঠিক সময়ে ঘুমোতে যাওয়া এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দিনের বেলার হালকা ঘুমের অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। শোবার ঘর থেকে টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল এগুলো সরিয়ে রাখতে হবে। এভাবেই অনিদ্রা রোগ ধীরে ধীরে দূর করা সম্ভব।

৬. ইতিবাচক চিন্তা করাঃ ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকলে মানুষের মনে বিভিন্ন রকম নেগেটিভ চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। যেমন, আমিই বুঝি সবচেয়ে খারাপ, আমার মত দুঃখ কারো নেই, আমি সবার চেয়ে অসুস্থ, আমি ব্যর্থ একজন মানুষ- এই ধরণের চিন্তাগুলো সুস্থ হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। তাই, এই নেগেটিভ চিন্তাগুলোকে মন থেকে দূর করে পজিটিভলি চিন্তা করার চেষ্টা করতে হবে। যুক্তি দিয়ে সবকিছু বিচার করতে হবে। আশাহত হওয়া যাবে না কোনভাবেই।

৭. আনন্দদায়ক কাজের মধ্যে সময় কাটানোঃ নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। মজার কোন কাজ। যেমন, নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয়া, মজার কোন বই পড়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া। মন ভালো রাখার সবরকম চেষ্টা করতে হবে। মন ভালো থাকলে ডিপ্রেশন কেটে যাবে একসময়।

৭. ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণঃ ডিপ্রেশন পুরোপুরি না ভালো হওয়া পর্যন্ত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।


হতাশা থেকে মুক্তির সহজ উপায় || depression || হতাশা ||depression and anxiety || causes of depression || হতাশা কি || হতাশা থেকে মুক্তির উপায়

 


হতাশা আমাদের জীবনে এক অতি সাধারণ ঘটনা, কিন্তু কি এই হতাশা এই হতাশা কোথাথেকে আসে!

আসলে হতাশা কি? 
কোনো কিছুর পরিবর্তন না করতে পারা অথবা কোনো অপূর্ণ রয়ে যাওয়া ইচ্ছা থেকে আমাদের মনে বিষন্নতা, ক্ষোভ এর সৃষ্টি হওয়াকে হতাশা নাম দেওয়া হয়েছে।

আমরা অনেক কারনেই হতাশার সম্মুখীন হই। এটা হতে পারে পড়াশোনা নিয়ে, ক্যারিয়ার নিয়ে, পারিবারিক ভাবে, ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে, প্রেম ঘটিত ব্যাপারে ইত্যাদি। আপনার হতাশ হওয়ার পেছনে অনেক জটিল কারণ থাকতে  কিন্তু হতাশা ঘিরে ধরা মানেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নয়।

এখন পর্যন্ত যত মানুষ জয়ী হয়েছেন, তার অধিকাংশ মানুষই হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। হতাশাগ্রস্ত থেকে উত্তরণের চেষ্টায়ই আজ তারা জয়ী। 

পরিস্থিতিভেদে হয়তোবা হতাশার পরিমাণ কম-বেশী হতে পারে তবে হতাশা যে আমাদের সকলের মধ্যেই আছে সেটাও সত্য।
হতাশ হওয়ার কারনগুলোকে খুজে বের করতে হবে আর একবার যদি আমরা এর যথাযথ উৎপত্তিস্থল বের করতে পারি তাহলে হতাশা থেকে বের হয়ে নিজেকে সঠিক পথে নিয়ে আসাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

১। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিনঃ

ব্যর্থতা মানসিকতাকে এমন জায়গায় নিয়ে আসে যখন মানুষ ভাবতে শুরু করে তার মধ্যে কমতি আছে। আমরা যখন আমাদের কাজে একের পর এক ব্যর্থতার শিকার হতে থাকি তখন অবচেতনভাবেই হতাশা, অবসাদে মন ছেয়ে যায়। তাই কোনো কিছু করতে গিয়ে না পারলে সেটাকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখলে চলবে না। এবং সেই ব্যার্থতার মধ্যে থাকা সফলতাকে খুঁজে পেতে হবে।

এইভাবে নিজের দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করতে পারলে বাঁধাবিপত্তি গুলোকে সুযোগে পরিণত করা যায়। ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে হতাশা থেকে উত্তরণ পেতে ইচ্ছাশক্তির জোর অবশ্যই থাকতে হবে, আর এভাবে তখনই ভাবতে পারবেন যখন সবকিছু শেষ হয়ে গেছে না ভেবে মাত্রই শুরু করলেন এভাবে ভাবতে পারবেন।

২। অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করুনঃ

আমরা এখন একটি প্রতিযোগীতামূলক বিশ্বে বসবাস করছি, যদিও বিষয়টি নতুননা, কিন্তু তারপরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উত্থান এর পর এই প্রতিযোগীতা  এমন ভাবে বেড়েছে, যেন আমরা আগুনে ঘি ঢেলেছি।বিশ বছর আগে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সদ্য কেনা গাড়ি অথবা অন্য কোনকিছুর সাথে নিজেদের কাছে থাকা জিনিষের তুলনা করতাম। আর এখন আমরা তুলনা করি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা সেলিব্রেটিদের সাথে অথবা পুরোনো বন্ধু বা কোনো অপরিচিত ব্যক্তির সাথে।
 কিন্তু যখন আপনি কারনে অকারণে সোশ্যাল মিডিয়াতে অনলাইন হওয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন আপনি অনেক বেশি ভালো বোধ করবেন এবং আপনার অকারন হতাশ থেকেও মুক্তি পাবেন।

৩। বাঁধা-ধরা নিয়ম থেকে বের হয়ে আসুনঃ

আমরা প্রত্যেকেই এই সমস্যাটির সাথে পরিচিত, কিন্তু একদম নিখুতভাবে বের করা খুব কষ্ট যে এই বাঁধা-ধরা নিয়মে চলার ফলে আমাদের হতাশা কোথা থেকে আসছে?

আপনি কি ধরণের জীবন-যাপন করবেন সেটা কোন ব্যপার নয়, শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই-ই একই ধরণের কাজ দিনের পর দিন করতে করতে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ি। আপনি আপনার জীবন নিয়ে স্বভাবতই সুখী হতে পারেন, কিন্তু তারপরেও আপনি কিন্তু একটি জালে আটকা রয়েছেন। আপনি একই গতিতে চলতে চলতে একটি নিয়মে আটকা পড়ে আছেন।

নিত্যদিনের কর্মসূচি আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ঠিক-ই কিন্তু দিনশেষে আমাদেরকে ধীর আর মনের স্ফুর্তি নষ্ট করে দিচ্ছে। এর মানে এই না যে, আপনি আপনার কাজ ছেড়ে দিবেন, আপনার পরিবার পরিজন ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়ে বসবাস করবেন। এরকম চিন্তা করলে হতাশা তো ছাড়বেইনা আরো বেশি আকারে বেড়ে যাবে। তাই এমন কিছু করার চেষ্টা করুন যা আপনি সব সময় করতে চেয়েছেন যা আপনি পারেন নি আগে, কারন কথায় আছে- আপনিই পারবেন!

৪। ক্ষমতা পুনরায় অর্জন করুন যদি ভাবেন আপনি ক্ষমতাহীণ হয়ে পড়ছেনঃ

আমরা নিয়ন্ত্রন করতে খুব পছন্দ করি, কিন্তু এমন কিছু বিষয় আছে যা আপনি চাইলেও নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন না। 

নিষ্ঠুর সত্য এই যে, আমরা চাইলেই আমাদের মত করে সব কিছু সাজাতে পারবোনা। কিন্তু যেসব বিষয়ের উপর আমরা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারি বা ট্যালেন্ট দেখাতে পারি সেই কাজগুলো ভালো ভাবে করতে পারলে আমরা অবশ্যই হতাশ হবোনা। 
হেরে যাওয়া যুদ্ধে সংগ্রাম না করে পুনরায় নতুন আঙ্গিকে নিজেদের ক্ষমতাকে এমন জায়গায় ব্যবহার করতে হবে যেখানে আমরা সেই বিষয়টিকে আমাদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারি। যেসবের উপর আমাদের হাত নেই সেখানে না চেষ্টা করে এমন কিছু ছোট ছোট বিষয়ের উপর আমরা নজর দিতে পারি যা পরিশেষে আমাদের নিজেদের জন্যেই ভালো কিছু বয়ে আনবে। তখন নিজের উপর বিশ্বাস ফিরে আসতে পারে, যে আপনার ও ভালো কিছু করার ক্ষমতা আছে, আপনি ক্ষমতাহীন নন।

৫। ভয়ের মোকাবিলা করুনঃ

হতাশা ভয়েরই প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ভয় একটি ভীতিকর ব্যপার হতেই পারে কিন্তু এমনও হতে পারে ছোট্ট একটি বিষয়ই আস্তে আস্তে বড় হয়ে গড়ে উঠেছে। এমন হতে পারে শুরুর দিকে এটা খুব ছোট্ট একটা কাজ ছিল, কিন্তু সেটাকে ফেলে রাখতে রাখতে অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে আর এখন অনেক বড় আকার ধারণ করেছে যা এখন ভয় আর হতাশার জন্ম দিয়েছে আপনার মনে। 

এর একটাই সমাধান হতে পারে, এখনই এই মুহূর্তে আপনার ভিতরে থাকা ভয়টিকে মোকাবিলা করার। আপনি যেই কাজটি করতে ভয় পাচ্ছেন আজ ই সেটা শুরু করে দিন খুব অল্প পরিসরে, কিন্তু আপনাকে শুরু করতেই হবে তাহলেই আপনার ভেতরে থাকা ভয়টিকে ধীরে ধীরে বিদায় করে দিতে সক্ষম হবেন এবং নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন ভয়ভীতি আর হতাশার জাল থেকে।

এসব হতাশার মুখোমুখি হতে ভয় পাবেন না। যখন আপনি আপনার সুবিধাজনক স্থান থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন, আপনি সব থেকে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবেন।


ফোবিয়া` বা ভয় কী? এর থেকে মুক্তির উপায় || phoebia || types of phoebia || phobia || phobias list

 

ভয়ে যেন শরীর ঠান্ডা হয়ে এল, গায়ের সব লোম দাঁড়িয়ে গেল তাঁর, থরথর করে কাঁপতে শুরু করল লোকটা। কিংবা ঘরে ঢুকেই চিৎকার দিয়ে মূর্ছা গেলেন এক গৃহিণী। এই সব ঘটনা আমরা মাঝে মাঝেই দেখে থাকি কিন্তু কি এই ভয়? এর থেকে মুক্তির উপায় বা কী? চলুন সেটাই দেখা যাক।
 সবচেয়ে সাধারণ আট ভীতি দেখা যায় সেগুলি হলো-

১:)মাকড়সা ভীতি :- অনেক মানুষেরই মাকড়সা ভীতি ( arachnophobia) আছে। আশপাশে কোথাও মাকড়সা আছে বা থাকতে পারে এমন মনে হলেই যেকোনো স্থানে যেকোনো সময়ে তারা ভয় পান। এমনকি শুধু মাকড়সার জাল বা মাকড়সার ছবি দেখেও তারা ভীত হয়ে উঠতে পারেন।
২:)সাপ ভীতি :-সাপের ভীতি ( Ophidiophobia ) থেকে সাধারণত একেক জন একেক রকম আচরণ করেন। কারণ একেক জনের ক্ষেত্রে সাপের ভয়ের চিন্তা, সাপের চিত্রকল্প, সাপের চলাফেরা বা নড়াচড়ার শব্দ আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা স্মৃতি থেকে এমনটা হতে পারে। সাপের ভীতি থেকে মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হতে পারে। সাপের ভয় মনের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকলে প্রায় অসম্ভব সব জায়গাতেও কেউ কেউ সাপের উপস্থিতি কল্পনা করে ভয় পেতে পারেন।
৩:)উচ্চতা ভীতি :- অনেক বেশি উঁচু জায়গায় উঠে গেলে আমরা অনেকেই ভয় পাই। বিশেষত সেখান থেকে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে বা সেখানে নিরাপত্তা কম থাকলে এটা প্রায় সবারই হয়। তবে, কারও কারও ক্ষেত্রে এটা প্রবল। একে উচ্চতা ভীতি (Acrophobia) বলে। 

৪:)কুকুর ভীতি :- কুকুর ভয় পান এমন কেউ প্রয়োজনে ঘরে বাসে থাকবেন কিন্তু কুকুরের সামনে পড়তে চাইবেন না। বিশেষত সঙ্গে কেউ না থাকলে এই ভয় তাদের মধ্যে বেশি মাত্রায় কাজ করে। কুকুর ভীতি (Cynophobia) অবশ্য একেক জনের একেক রকম হতে পারে। কেউ কেউ কুকুরের ডাক শুনেই ভয়ে কেঁপে উঠতে পারেন।

৫:)বিদ্যুৎ চমক ও বজ্রপাতের ভীতি

৬:)ইনজেকশন ভীতি

৭:)উড়াল ভীতি :- উড়তে ভয় পান অনেকেই। একে উড়াল ভীতি (Pteromerhanophobia) বলা হয়। বিমান, বেলুন বা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই এই উড়াল ভীতি তৈরি হয়।

৮:)ধুলোময়লা ও জীবাণু ভীতি

ফোবিয়ার শারীরিক লক্ষণ:
 ১. হার্টরেট বেড়ে যাওয়া।
 ২. গলা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া। 
৩. প্রচণ্ড ঘাম। 
৪. বুকে ব্যথা। 
৫. পেশিতে টান, কাঁপুনি। 
৬. বমিবমি ভাব।
 ৭. নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা।
 ৮. পেটে অসুবিধা, ডায়রিয়া। 
৯. মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

ফোবিয়ার মানসিক লক্ষণ:
 ১. অমূলক ভয়ের পরিস্থিতি, বাইরের লোকজন এড়িয়ে চলা। 
২. আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া। 
৩. হতাশ লাগা।

 চিকিত্‍সা: বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট এই পদ্ধতিতে ডাক্তার সাধারণত অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট, সেডেটিভস দেন রোগীকে। নন-বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্রথমে ডাক্তার কিছু রিল্যাক্সেশন টেকনিক দেখিয়ে দেন রোগীকে। এতে পেশীগুলোর সঞ্চালন সহজ হয়। এর পরের ধাপ হলো সিস্টেমেটিক ডিসেন্সেটাইজেশন। এতে যে পরিস্থিতিকে রোগী ভয় পায়, নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিতভাবে রোগীকে ধাপে ধাপে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি আনা হয়। ধীরে ধীরে রোগী তখন ভয়টা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। এ সব রকমের পদ্ধতিতে পরিবারের সবার সাহায্য খুব দরকার। অনেক সময় বাড়ির লোক, আত্মীয়স্বজন কো-থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করে। 
ভয় বা আতঙ্ক দূর করবেন কীভাবে? ভয় পাওয়ার বিষয়টি মনোচিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেন মানসিক বিষয় হিসেবে। অনেকে আছেন, যাঁরা একা ঘরে ঘুমাতে ভয় পান, ভূতের সিনেমা দেখে ভয় পান কিংবা রাতে ওয়াশরুমে যেতে ভয় পান। এই আতঙ্কের প্রধান কারণ হলো, আপনি মনের মধ্যে ভয়কে পুষে রেখেছেন, যা আপনিই দূর করতে পারেন। আর হ্যাঁ, এর জন্য মানসিক ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
 

আপনার করণীয়:
১. প্রথমে ভালো করে লক্ষ করুন, কোন বিষয়গুলোতে আপনি ভয় পাচ্ছেন। সেখানে ভয় পাওয়ার মতো কোনো বিষয়ের অস্তিত্ব আছে কি না। 
২. অনেক সময় কৌতূহলের কারণেও মনের ভয় দূর হয়। আপনি যদি মনের মধ্যে ভয় পুষে রাখেন, তাহলে তা কোনো দিনই দূর হবে না। যে বিষয়টাতে আপনি ভয় পাচ্ছেন, সেই বিষয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠুন। দেখবেন, যখন পুরোটা জেনে যাবেন, তখন আর ভয় কাজ করবে না।
 ৩. ভয় পেলে সঙ্গে সঙ্গে কোনো না কোনো কাজ করতে থাকুন। কোনোভাবেই চুপচাপ বসে থাকবেন না। কাজের মধ্যে থাকলে ভয়ের কথা আপনি একসময় ভুলে যাবেন। 
৪. প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন। এটা আপনার ভয় কাটাতে সাহায্য করবে। 
৫. বই পড়ুন। প্রিয় লেখকের বই আপনার সব ধরনের বিষণ্ণতা, ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। 
৬. বেশি করে খান। চট করে পছন্দের খাবারটি তৈরি করে ফেলুন। দেখবেন, এক নিমেষেই আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। আর ভয়, সেটা তো রান্না করতে করতেই ভুলে যাবেন। 
৭. সাধারণ ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন। দেখবেন, আপনার ক্লান্তি দূর হবে। মস্তিষ্ক সতেজ মনে হবে। দেখবেন, ভয়ের কারণে আপনার শরীরে যে ভার অনুভব করছেন, তখন সেটা অনেক হালকা মনে হবে। 
৮. প্রার্থনা করুন। প্রার্থনা ধ্যান করার মতো। দেখবেন, মনের ভয় বা আতঙ্ক সহজেই দূর হয়ে যাবে।